১৯৬৫ সালে সিরিয়ায় ইসরায়েলের গুপ্তচর এলি কোহেনকে প্রকাশ্যে ফাঁসি দেওয়া হয়েছিল। এখন, বহু বছর পর, মোসাদ কোহেনের দেহাবশেষ উদ্ধার করার জন্য নতুন আলোচনা শুরু করেছে ইসরায়েল। কোহেনের গুপ্তচরবৃত্তি ১৯৬৭ সালের ছয়দিনের যুদ্ধে ইসরায়েলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য অর্জনে সহায়ক ছিল, তবে তাঁর দেহাবশেষ এখনও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
এলি কোহেন ১৯২৪ সালে মিশরের আলেকজান্দ্রিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৪৮ সালে ইসরায়েল প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর তিনি ইসরায়েলে চলে যান এবং ১৯৫৭ সালে ইসরায়েলি সামরিক গোয়েন্দা বিভাগে যোগ দেন। ১৯৬০-এর দশকের শুরুর দিকে, মোসাদ তাঁকে সিরিয়ার গুপ্তচর হিসেবে কাজ করতে পাঠায় এবং তিনি কামেল আমিন থাবেত নামে সিরীয় ব্যবসায়ীর ছদ্মবেশে আর্জেন্টিনা ও সিরিয়া যান। সেখানে তিনি সিরিয়ার রাজনৈতিক ও সামরিক ব্যক্তিদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন এবং ইসরায়েলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করেন, বিশেষ করে সিরিয়ার গোলান মালভূমির সামরিক ঘাঁটি সম্পর্কে।
তবে ১৯৬৫ সালে সিরিয়ার গোয়েন্দা সংস্থা কোহেনের গুপ্তচরবৃত্তির কার্যক্রম ধরতে সক্ষম হয়। ২৪ জানুয়ারি সিরীয় কর্তৃপক্ষ তাঁকে গ্রেপ্তার করে এবং ১৮ মে প্রকাশ্যে ফাঁসি দেয়। এর পর থেকে ইসরায়েল তাঁর মরদেহ ফেরত চেয়ে আসছে, কিন্তু সিরিয়া তা প্রত্যাখ্যান করেছে এবং মরদেহ অন্যত্র সরিয়ে ফেলা হয়েছে বলে জানা যায়। ২০১৮ সালে মোসাদ কোহেনের হাতঘড়ি উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।
বর্তমানে সিরিয়ায় আসাদ সরকারের পতন এবং দেশটির কিছু অংশে অস্থিরতার কারণে ইসরায়েল নতুন করে কোহেনের দেহাবশেষ উদ্ধার করার চেষ্টা চালাচ্ছে। এই আলোচনা রাশিয়ার মধ্যস্থতায় সাবেক সিরীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে হচ্ছে এবং মোসাদ প্রধান ডেভিড বার্নিয়া এতে সরাসরি অংশ নিচ্ছেন।
এলি কোহেনের জীবন ও গুপ্তচরবৃত্তি এখনও গুপ্তচরবৃত্তির ইতিহাসে একটি মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হয়। তাঁর কাজ ইসরায়েলের সামরিক কৌশলে বড় ভূমিকা রেখেছিল, কিন্তু যদি মরদেহ উদ্ধার করা না যায়, তবে তা ইতিহাসের এক অসমাপ্ত অধ্যায় হিসেবেই রয়ে যাবে।